বিশেষ প্রতিনিধি, মোঃ মনির।।
মোঃ কামরুল ইসলাম, রাঙ্গামাটি জেলা প্রতিনিধি;-
রাঙ্গামাটির বরকল উপজেলার দক্ষিণ এরাবুনিয়া–ভূষণছড়া সড়কের পাশ থেকে সরকারি বনায়নের শতাধিক গাছ কেটে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে সাবেক উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোতালেব মুন্সীর বিরুদ্ধে। স্থানীয়দের দাবি, দীর্ঘ দিন ধরে তাঁর প্রভাব খাটিয়েই সরকারি এই গাছ কাটা হয়েছে।সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, একসময় দু’ধারে সবুজে ঘেরা সড়কটি এখন প্রায় বৃক্ষশূন্য। বিভিন্ন স্থানে গাছের কাটা গুঁড়ি পড়ে আছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বিএনপি সরকারের সময় সামাজিক বনায়ন প্রকল্পের আওতায় সেগুন, নিম, গামারি ও ফলদ–বনজ মিলিয়ে অসংখ্য গাছ লাগানো হয়েছিল। পরে আওয়ামী লীগ সরকারের গত মেয়াদে মোতালেব মুন্সী দায়িত্বে থাকা অবস্থায় ধাপে ধাপে এসব গাছ কেটে বিক্রি করা হয়। ৫ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ এরাবুনিয়ার বাসিন্দা মোতালেব মুন্সী (পিতা: মৃত হাকিম মুন্সী) সরকারি সম্পদ বিনষ্টে রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করেছেন বলেও অভিযোগ স্থানীয়দের।
ছেলের জামায়াত ঘনিষ্ঠতা নিয়ে নতুন প্রশ্ন
এ ঘটনাকে ঘিরে এলাকায় নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে আরেক তথ্য। স্থানীয়দের দাবি, অবশিষ্ট গাছ কাটার নতুন উদ্যোগে এবার নেতৃত্ব দিচ্ছেন মোতালেব মুন্সীর ছেলে, যিনি স্থানীয় জামায়াতে ইসলামের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তাঁর জামায়াত ঘনিষ্ঠতার কারণে কাজটি আরও ‘নির্ভয়ে’ এগোচ্ছে বলেও অভিযোগ।
স্থানীয় সাংবাদিক কামরুল ইসলাম বলেন, “রাস্তার দুই পাশের গাছগুলো একসময় আমাদের এলাকার সৌন্দর্য ও পরিবেশ রক্ষার বড় ভরসা ছিল। এখন এগুলোর বেশির ভাগই কেটে ফেলেছে। বাকি গাছগুলো নিয়েও নতুন করে পাঁয়তারা চলছে এটা দুঃখজনক।
এলাকায় ছড়িয়ে পড়া আলোচনায় আরও উঠে এসেছে বরকল উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মো. রবিউল ইসলামের সঙ্গে মোতালেব মুন্সীর ছেলের ঘনিষ্ঠতার কথা। তবে অভিযুক্ত পরিবারটির কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সাড়া মেলেনি।প্রশাসনের নীরবতা নিয়ে সমালোচনা
এত বড় ধরনের সরকারি সম্পদ নষ্ট হলেও স্থানীয় প্রশাসন ও বন বিভাগের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বাসিন্দারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষক বলেন, দিনের পর দিন গাছ কাটা হচ্ছে। কিন্তু ব্যবস্থা নেওয়া তো দূরের কথা এ নিয়ে কেউ কোনোভাবে কথা বলতেও সাহস পায় না।এদিকে পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা দ্রুত তদন্ত, দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা এবং সরকারি বনজ সম্পদ রক্ষায় কঠোর নজরদারির দাবি তুলেছে।