বিশেষ প্রতিনিধি, মোঃ মনির।।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর)। স্বাভাবিকভাবেই এই নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে সারাবিশ্ব। ব্যতিক্রম নয় দেশটির সঙ্গে বৈরী সম্পর্ক থাকা চীনও। চীনের সাধারণ জনগণ অত্যন্ত আগ্রহের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিকে নজর রাখছেন। অবশ্য তাদের মধ্যে কিছুটা উদ্বেগও কাজ করছে।
নির্বাচনে জিতে যে-ই হোয়াইট হাউজে যান না কেন, তারপর দেশে-বিদেশে কী ঘটতে পারে- তা নিয়েই কিছুটা ভয় দেখা যাচ্ছে চীনা নাগরিকদের মধ্যে।
আমাদের মধ্যে কেউই যুদ্ধ দেখতে চাই না, বলছিলেন জিয়াঙ নামের ষাটোর্ধ্ব একজন চীনা নাগরিক। অন্য বয়স্ক সঙ্গীদের সঙ্গে তিনি বেইজিংয়ের রিতান পার্কে নাচ শিখতে এসেছেন। পার্কটি চীনে অবস্থিত মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বাসভবন থেকে মাত্র কয়েকশ মিটার দূরে। জিয়াঙ ও তার সঙ্গীদের সবাই নিয়মিতভাবেই এখানে নাচ শিখতে আসেন।
২০১৯ সালে জাপানের ওসাকায় জি-২০ সম্মেলনের ফাঁকে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং/ ছবি: এএফপি।পার্কে নাচের নতুন মুদ্রা শেখার পাশাপাশি আসন্ন মার্কিন নির্বাচন নিয়েও আলাপ-আলোচনা করে থাকেন তারা। কারণ এবছর এমন একটি সময়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, যখন তাইওয়ান ও ব্যবসা-বাণিজ্যসহ আন্তর্জাতিক নানান বিষয় কেন্দ্র করে দুই পরাশক্তি চীন-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
জিয়াং বলেন, আমরা শান্তি চাই। তবে চীন-মার্কিন সম্পর্কে ক্রমেই টানাপোড়েন বাড়ছে, যা দেখে আমি চিন্তিত।ধরনের আলাপ-আলোচনা শুনতে অনেকেই পার্কটিতে ভিড় জমান। যারা এখানে আলোচনায় অংশ নেন, তাদের বেশিরভাগের মধ্যেই নিজের পুরো নাম বলার ব্যাপারে অনাগ্রহ দেখা যায়। মূলত তারা এমন একটি দেশে বসবাস করেন, যেখানে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে নিয়ে কথা বলা গেলেও, নিজ দেশের নেতাদের বিষয়ে কথা বলতে ভয় পান অনেকে। কারণ নেতাদের সমালোচনা করে কথা বললে তারা সমস্যায় পড়তে পারেন।
পার্কে একত্রিত হওয়া এসব চীনা নাগরিকরা বলছিলেন যে, তারা যুদ্ধ নিয়ে বেশ চিন্তিত। এর অর্থ এই নয় যে, কেবল ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যকার দ্বন্দ্ব ঘিরেই তাদের মধ্যে উদ্বেগ কাজ করছে। বরং মধ্যপ্রাচ্য ও ইউক্রেনে এখন যে যুদ্ধ চলছে, তা আরও তীব্রতর হয়ে অন্যত্র ছড়িয়ে পড়ে কি না, তা নিয়েও তাদের মধ্যে দুশ্চিন্তা কাজ করছে।
আর সে কারণেই সত্তরের ঘরে পা দেওয়া মেঙ চান যে, এবারের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়লাভ করুক। তিনি বলেন, যদিও ট্রাম্প চীনের ওপর অনেকগুলো অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন, কিন্তু কোনো যুদ্ধ শুরু করেননি। উল্টো দিকে, জো বাইডেন আরও যুদ্ধ বাঁধিয়েছেন। সে কারণে অনেক সাধারণ মানুষ তাকে অপছন্দ করে।