দেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি সবর আছেন সামাজিক নানা কর্মকাণ্ডের সঙ্গেও। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার হয়ে ছিলেন রাজপথে। শেখ হাসিনা সরকার পতনের পরও সজাগ ছিলেন এই অভিনেত্রী। তবে এরই মধ্যেই কথা রটে, তিনি নাকি ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর এজেন্ট! মাঝে এও বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা ‘সিআইএ’ ও ইসরায়েলি ‘মোসাদ’র হয়ে কাজ করছেন রেহানা মরিয়ম নূর’খ্যাত এই অভিনেত্রী।
অবশেষে বিষয়টি নিয়ে মুখ খুললেন আজমেরী হক বাঁধন। আজ রবিবার এক ফেসবুক পোস্টে আক্ষেপ করে এই অভিনেত্রী লিখেছেন, ‘কী মর্মান্তিকভাবে নষ্ট হলো এক ঐতিহাসিক সুযোগ! আমি স্বপ্ন দেখেছিলাম একটি ভালো, ন্যায়ের ওপর গড়া দেশ, যেখানে থাকবে সততা, থাকবে আশার আলো। কিন্তু সেই স্বপ্ন এখন চূর্ণবিচূর্ণ।’
এরপরই তিনি তুলে ধরলেন তাকে ছড়ানো নানা গুজবের কথা। অভিনেত্রীর ভাষ্য, ‘২০২১ সালে আমি একজন গর্বিত র এজেন্ট ছিলাম। তখন প্রিয় অভিনেত্রী টাবুর সঙ্গে বিশাল ভারদ্বাজ পরিচালিত বলিউড সিনেমা “খুফিয়া”য় অভিনয় করেছিলাম। কিন্তু পরে অবস্থা গেল বদলে। আমি সিনেমার প্রিমিয়ারেও যোগ দিতে পারিনি। কেন? কারণ ভারতীয় হাইকমিশন আমার ভিসা প্রত্যাখ্যান করেছিল। একবার নয়, পাঁচবার।
ভারতের ভিসা বাতিল হওয়ার কারণ হিসেবে বাঁধন লিখেছেন, ‘তাদের সাথে আমার দুটি সাক্ষাৎকার হয়। সেসময় মনে হলো তারা আমার একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট নিয়ে খুব চিন্তিত। ইউএস অ্যাম্বাসির প্রোগ্রামে ভিপি নূরের সাথে একটি ছবি! এরপর আমি আমার দেশের কিছু উচ্চপদস্থ বন্ধুর সঙ্গে বিষয়টি শেয়ার করি এবং এক মাসের সিঙ্গেল এন্ট্রি ভিসা পাই। দুটি প্রভাবশালী সূত্রে জেনেছি, একজন গুরুত্বপূর্ণ অভিনেত্রী আমার ভিসা সমস্যার পেছনে কলকাঠি নেড়ে থাকতে পারেন, কে জানে! এটা আমার কথা না। এ কারণে, আমি বলিউড ও কলকাতায় বেশ কিছু বড় সুযোগ হারিয়েছি। যদিও অপেক্ষা করছি এখনও, আমার যাত্রা এখানেই শেষ নয়!’
নিজের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা সংস্থার চর হিসেবে কাজ করার অভিযোগ প্রসঙ্গে বাঁধন লিখেছেন, ‘জুলাই বিদ্রোহের সময় বলা হয়েছিল সিআইএ এজেন্ট, “ঐতিহাসিক বিপ্লব”র সঙ্গে থাকার জন্য মার্কিন দাতা সংস্থা ইউএসএআইডির কাছ থেকে টাকা নিয়েছি। তারপর এলো জামাত এজেন্টের তকমা, শুধু তাদের একজন নেতার একটি ভিডিও আমার পেজে শেয়ার করেছিলাম বলে। কেউ কেউ এমন দাবিও করেছেন যে, আমি মোসাদের হয়েও কাজ করছি নিশ্চয়ই! আর গত রাতেই আমি আবার র-এর এজেন্ট হয়ে গেছি! বর্তমান সরকারের ঘনিষ্ঠ এক বন্ধু আমাকে বেশ গম্ভীরভাবেই জিজ্ঞেস করলে “টাকা খাইছো?”
সবশেষে হতাশা প্রকাশ করে বাঁধন লিখেছেন, ‘কি এক সমাজে আমরা বাস করি! যারা নিঃশর্তভাবে নিজের দেশকে ভালোবাসে না, তারা ভাবে অন্য কেউও সেটা করে না।