ঢাকা | বঙ্গাব্দ

রাঙামাটি থেকে: জামায়াতে ইসলামীর স্মারকলিপি: জুলাই সনদের বাস্তবায়ন ও গণভোটসহ ৫-দফা দাবি, উত্তাপ বাড়ছে জাতীয় রাজনীতিতে

  • আপলোড তারিখঃ 12-10-2025 ইং |
  • নিউজটি দেখেছেনঃ 10406 জন
রাঙামাটি থেকে: জামায়াতে ইসলামীর স্মারকলিপি: জুলাই সনদের বাস্তবায়ন ও গণভোটসহ ৫-দফা দাবি, উত্তাপ বাড়ছে জাতীয় রাজনীতিতে ছবির ক্যাপশন: ১



​মো: কামরুল ইসলাম , রাঙামাটি  জেলা প্রতিনিধি:-

​আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন এবং উক্ত আদেশের ওপর গণভোট আয়োজনের জোরালো দাবি নিয়ে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলের পক্ষ থেকে রবিবার  (১২ অক্টোবর) রাঙামাটি জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে একটি ৫-দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি পেশ করা হয়েছে। তাদের এই পদক্ষেপ জাতীয় রাজনীতির আলোচনার টেবিলে একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে, যেখানে জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সংস্কারগুলো নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্যের চেষ্টা চলছে।

​জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রুহুল আমীন-এর কাছে স্মারকলিপিটি হস্তান্তর করেন জামায়াতে ইসলামীর রাঙামাটি পার্বত্য জেলার আমির অধ্যাপক মুহাম্মদ আব্দুল আলিমসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর মাওলানা মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, জেলা সেক্রেটারি মুহাম্মদ মছুরুল হক, শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মোহাম্মদ আব্দুস সালাম, ছাত্র শিবিরের জেলা সেক্রেটারি ইরফানুল হকসহ দলের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ।


​স্মারকলিপিতে জামায়াতে ইসলামী দাবি করেছে, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের সফল গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে জনগণের প্রত্যাশা ও জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। এই সরকারের প্রধান লক্ষ্য ছিল দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা, মানবাধিকার সংরক্ষণ এবং দীর্ঘদিনের স্বৈরাচারী শাসনের অবসান ঘটানো।

​তবে জামায়াতে ইসলামী মনে করে, সরকার 'জুলাই জাতীয় ঘোষণাপত্র' ও 'জুলাই জাতীয় সনদ' প্রণয়ন করলেও এখনও সেটিকে আইনগত ভিত্তি দেওয়া হয়নি। দলের পক্ষ থেকে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয় যে, এটি জনগণের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত অভ্যুত্থানের মূল লক্ষ্যকেই ব্যর্থ করে দিতে পারে। স্মারকলিপিতে সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের জন্য অবিলম্বে সংবিধান আদেশ জারি ও নির্বাচনের পূর্বে গণভোটের আয়োজন করতে হবে। এতে জনগণের আস্থা ফিরে আসবে এবং দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত হবে।

​গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষতি এবং বিগত সরকারগুলোর দমননীতির দিকে ইঙ্গিত করে জামায়াতে ইসলামী তাদের স্মারকলিপিতে গুরুত্বপূর্ণ ও কঠোর দুটি দাবি উত্থাপন করেছে। প্রথমত, বিগত সরকারগুলোর স্বৈরাচারী কর্মকাণ্ড ও রাজনৈতিক দলসমূহের দমননীতির ফলে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই স্বৈরাচারী ও ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার দাবি জানানো হয়েছে।

​দ্বিতীয়ত, অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করতে জামায়াতে ইসলামী জাতীয় নির্বাচনে উভয় কক্ষে পিআর (Proportional Representation) পদ্ধতি চালুর দাবি জানিয়েছে। একই সাথে সবার জন্য 'লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড' নিশ্চিত করার ওপরও জোর দেওয়া হয়েছে।


​স্মারকলিপিতে জামায়াতে ইসলামী’র ৫-দফা দাবি এক নজরে:-

​১. আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি ও গণভোট আয়োজন।

২. জাতীয় নির্বাচনে উভয় কক্ষে পিআর (Proportional Representation) পদ্ধতি চালু।

৩. সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন।

৪. পূর্ববর্তী সরকারের জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা।

৫. স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা।

​রাঙামাটির জামায়াতে ইসলামী নেতারা স্মারকলিপি হস্তান্তরের সময় বলেন, উল্লিখিত দাবিগুলো বাস্তবায়ন হলে জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধার হবে, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে এবং ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচন একটি গ্রহণযোগ্য পরিসরে অনুষ্ঠিত হতে পারবে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে সংস্কার প্রক্রিয়া নিয়ে চলা বিতর্কের মধ্যে জামায়াতের এই স্মারকলিপিটি প্রধান উপদেষ্টা সরকারের ওপর একধরনের চাপ সৃষ্টি করবে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।


নিউজটি পোস্ট করেছেনঃ মোঃ মনির

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ
notebook

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও প্রশাসনিক কার্যক্রমে গতি আনতে রাঙ্গামাটির পুলিশ সুপারের লংগদু ও বাঘাইছড়ি সার্কেল অফিস পরিদর্শন