ঢাকা | বঙ্গাব্দ

ম্রো জনগোষ্ঠীর জুমক্ষেত, ফল বাগান ধ্বংসের অভিযোগ বনবিভাগের বিরুদ্ধে।

  • আপলোড তারিখঃ 28-06-2025 ইং |
  • নিউজটি দেখেছেনঃ 242557 জন
ম্রো জনগোষ্ঠীর জুমক্ষেত, ফল বাগান ধ্বংসের অভিযোগ বনবিভাগের বিরুদ্ধে। ছবির ক্যাপশন: ১



জেলা প্রতিনিধি, বান্দরবান।


বান্দরবানের ম্রো জনগোষ্ঠীর সৃজিত কলা ও পেঁপে বাগান কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে বনবিভাগের বিরুদ্ধে।

আলীকদম উপজেলার নয়াপাড়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের খইয়া ঝিরি এলাকার মেনথক ও কাইংওয়াই ম্রো পাড়ায় প্রায় পাঁচটি ফলজ বাগান থেকে অন্তত ১২০০টি কলাগাছ ও ৩০০টিরও বেশি উচ্চ ফলনশীল পেঁপে গাছ কেটে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।


ভুক্ত ভোগীদের অভিযোগ, গত ( শনিবার ২১ জুন) লামা বন বিভাগের অধীন আলীকদম রেঞ্জের কর্মকর্তারা কোনো প্রকার নোটিশ বা পূর্ব আলোচনা ছাড়াই ফলবাগান গুলো কেটে ফেলেন। পরে ওই জমিতে বনবিভাগ আকাশমণি ও ইউক্যালিপটাস সহ বিভিন্ন প্রজাতির বনজ চারা রোপণ করে।


ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মধ্যে রয়েছেন ইয়াং বো ম্রো, রেংথাং ম্রো, ডিং ওয়াই ম্রো, মেনদি ম্রো, মেংক্রিং ম্রো, অংহ্লা ম্রো ও মেনলাং ম্রো।


স্থানীয় বাসিন্দা ইয়াং বো ম্রো বলেন, এই পাহাড়ে আমরা চৌদ্দ পুরুষ ধরে বসবাস করছি। জুম চাষ ও ফলবাগান আমাদের জীবিকার একমাত্র উৎস। অথচ হঠাৎ করেই বন বিভাগের লোকজন এসে সব গাছ কেটে ফেলল। আমরা কোনোদিন বন ধ্বংস করিনি।


অন্যদিকে, মেবদি ম্রো ও অংহ্লা ম্রো জানান, তাদের সম্প্রতি রোপণ করা জুমের ধানও নষ্ট করে দিয়েছে বন বিভাগের কর্মীরা। তারা জানান, ধান গজাতে শুরু করলেও বন বিভাগের লোকজন বনজ চারা লাগাতে গিয়ে সব ধানগাছ নষ্ট করে দেয়।


ভুক্তভোগীরা আরও জানান, গাছ কাটার কারণ জানতে চাইলে এক বন কর্মকর্তা হুমকি দিয়ে বলেন, এই বিষয়ে সাংবাদিক বা অন্য কারও কাছে অভিযোগ করলে রিজার্ভ বন ধ্বংস ও গাছ পাচারের মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হবে। এই হুমকির কারণে প্রাথমিকভাবে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাননি। পরে পাড়াবাসীর মধ্যে আলোচনা হওয়ার পর গণমাধ্যমে বিষয়টি জানানোর সিদ্ধান্ত নেন তারা।


মেনথক পাড়ার এক বয়োবৃদ্ধ নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমরা পাহাড়ে শান্তিতে থাকি, বন রক্ষা করি। কিন্তু এখন বনবিভাগই আমাদের ফসল ধ্বংস করছে।


এ বিষয়ে জানতে চাইলে আলীকদম রেঞ্জ কর্মকর্তা জসিম উদ্দীন এলাহি বলেন, এই জায়গা গুলো বনবিভাগের আওতাভুক্ত। সরকার সামাজিক বনায়ন প্রকল্পের আওতায় স্থানীয়দের সঙ্গে সমন্বয় করে বনায়নের উদ্যোগ নিয়েছে। কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে ফলবাগান ধ্বংস করেছে বলে আমার জানা নেই।


তবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য রিংরুই ম্রো বলেন, বন বিভাগের এ ধরনের আচরণ শুধু আদিবাসীদের জীবিকা নয়, তাদের সংস্কৃতি ও জীবনধারার ওপরও আঘাত করা। আমরা এর বিচার ও ক্ষতিপূরণ দাবি করছি।


লামা বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে কোনো বাগান ধ্বংস করা হয়নি। সংরক্ষিত বনাঞ্চলে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী চারা রোপণের জন্য ঝোপঝাড় পরিষ্কার করা হয়েছে মাত্র, কিছু জঙ্গলী কলা গাছ কাটা হয়েছে। তিনি রেঞ্জ কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করার পরামর্শ দিয়ে বলেন, সরেজমিনে না গিয়ে শোনা কথায় বিশ্বাস করা যায় না।




কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ
notebook

রাঙ্গামাটিতে নবাগত পুলিশ সুপারের বিশেষ কল্যাণ সভা: পেশাদারিত্ব ও জনবান্ধব পুলিশিংয়ের নির্দেশ